রাজধানীর কল্যাণপুরের ৫ নম্বর রোডের জাহাজ বাড়িতে পুলিশের ‘অপারেশন স্টর্ম ২৬’ অভিযানে নিহত নয় জঙ্গির মধ্যে মতিয়ার রহমান হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান। তার গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানার ধানদিয়া ইউনিয়নের ওমরপুর গ্রামে। বুধবার রাতে ডিএমপি আরও চার জঙ্গির নামপরিচয় প্রকাশ করলে সেখানে মতিয়ারের নাম পাওয়া যায়।
মতিয়ারের ব্যাপারে জানতে চাইলে স্থানীয় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মতিয়ারের বাবা নসিরউদ্দিন বাড়িতে থেকে বিল-খালের মাছ ধরে সংসার চালান। এর বেশি তিনি জানেন না বলে জানান।
কল্যাণপুরে নিহতরা ধনাঢ্য পরিবারের সন্তান বলে গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া জানিয়েছিলেন। সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, তাদের পোশাক, কথাবার্তা, চালচলনে প্রতিভাত হয়েছে তারা উচ্চশিক্ষিত। পুলিশের ওপর হামলার সময় তারা যেভাবে গালাগাল দিচ্ছিল, তাতে তাদের মনে হয়েছে তারা এলিট শ্রেণির।’ কিন্তু পরিচয় প্রকাশের পর জানা গেল নিহত জঙ্গিদের মধ্যে অনেকে উচ্চবিত্তের সন্তান হলেও মতিয়ার ছিলেন হতদরিদ্র পরিবারে সন্তান।
এদিকে সন্ধ্যায় এ খবর প্রচার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ তৎপর হয়ে ওঠে। পাটকেলঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনোজিত কুমার নন্দী জানান, মতিয়ারের বাড়িতে পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক সনাতন কুমারকে পাঠানো হয়েছে।
মতিয়ার সম্পর্কে ধানদিয়া ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য গোলাম সরওয়ার বাবলু বলেন, “মতিয়ার রহমানের বাবা নসিরউদ্দিনের চার বিয়ে করেছেন।এখন কোনো স্ত্রীই তার কাছে থাকেন না। মতিয়ারের মা খায়রুননেসা তার প্রথম স্ত্রী। মতিয়ারের বয়স যখন দেড় বছর, তখন তার মার সঙ্গে বাবার ছাড়াছাড়ি হয়। প্রায় ২০ বছর আগে মতিয়ারের মা ছেলেকে নিয়ে ওমরপুর গ্রাম ছেড়ে বাপের বাড়ি ধানদিয়ায় চলে যান।
ইউপি সদস্য বাবলু আরও বলেন, “মতিয়ারের বাবা নসিরউদ্দিন আওয়ামী লীগের সমর্থক। তিনি অত্যন্ত দরিদ্র মানুষ। বসতভিটা ছাড়া তাদের কোনো জমি নেই। মতিয়ারের মা ও মতিয়ার ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরি করতেন বলে জানেন তিনি।
তবে তাদের সঙ্গে জঙ্গিবাদের কোনো সম্পর্ক আছে কি না তা তিনি জানেন না বলে জানান ওই ইউপি সদস্য। তিনি জানান, গ্রামের বাড়ির সঙ্গে মতিয়ারদের কোনো যোগাযোগ নেই। সর্বশেষ কিছুদিন আগে তার মা একবার এসেছিলেন বলে জানান তিনি।
গতকাল মঙ্গলবার ভোর ৫টা ৫১ মিনিটে রাজধানীর কল্যাণপুরে ৫ নম্বর সড়কের ৫৩ নম্বর বাড়িতে একটি জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালায় সোয়াত, র্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। স্থানীয়ভাবে ‘জাহাজ বিল্ডিং’ নামে পরিচিত ওই বাড়িতে অভিযানের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলিতে ৯ জঙ্গি নিহত হয়। এ সময় গুলিবিদ্ধ এক জঙ্গিসহ দুজনকে আটক করে পুলিশ।
আরও পড়ুন