নান্দাইল থানা পুলিশ রবিবার সকাল ১১টার দিকে ছাত্রলীগের চার নেতাকে আটক করে দুপুর ৩টার দিকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে তুলে দিয়েছে। ওসি মো. কামরুল ইসলাম মিয়ার কাছে প্রথমে ২০ হাজার পরে ২ লাখ টাকা চাঁদা চাইতে গিয়ে পুলিশের হাতে ছাত্র সংগঠনটির চার নেতা আটক হয়। পরে উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশে ডিবি পুলিশ আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে তাদের কার্যালয়ে নিয়ে যায়।
জানা যায়, আটককৃতরা হচ্ছেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মো. দিদারুল ইসলাম ওরফে রাজু, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হাসান রয়েল, পৌর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি টিটু চন্দ্র দে, কলেজ ছাত্রলীগের সদস্য মো. কামরুল ইসলাম। এই বিষয়ে ওসি মো. কামরুল ইসলাম মিয়া দৈনিক ময়মনসিংহ প্রতিদিনকে বলেন, রবিবার সকাল ১১ টার দিকে ওই চার নেতা তাঁর কার্যালয়ে প্রবেশ করে।
প্রথমে তার উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদুল আলম ফয়সালের বরাত দিয়ে এই টাকা দাবি করেন। ওসি আরো বলেন, আমি ফয়সালকে চিনিনা। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে নানা ধরনের মন্তব্য করতে থাকেন। ঘটনাটি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করে ওই চার নেতাকে থানায় বসিয়ে রাখেন ওসি।
পর তিনি ময়মনসিংহ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গৌরীপুর সার্কেল) সাখের হোসেন সিদ্দিকীকে অবহিত করলে তিনি নান্দাইল থানায় উপস্থিত হন। এর কিছুক্ষণ পর জেলা থেকে ডিবি পুলিশের একটি দল বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য নিয়ে নান্দাইল থানায় প্রবেশ করে। ডিবি পুলিশের দলটি ছাত্রলীগের চার নেতাকে কড়া নিরাপত্তায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নিয়ে যায়। এতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় নান্দাইল শহরে পুলিশের টহল জোরদার করা হয়। ছাত্রলীগের এই চার নেতা আটক হওয়ার পর তাদের বিরোদ্ধে আরো কিছু চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া যায়।
কৃষি ব্যাংক নান্দাইল শাখার ঋণ কর্মকর্তা মো. ইসলাম উদ্দিন বলেন, ছাত্রলীগের পরিচয়ে তাঁর ফোনে বেশ কয়েকদিন ধরে ফোন দিয়ে চাঁদা দাবি করা হচ্ছিল। রবিবার ব্যাংকে আসবে বলে হুমকি দিয়েছিল। অপরদিকে পৌরসভায় সরকারি কারিগরি স্কুল এন্ড কলেজের ভবন নির্মাতা ঠিকাদারের কাছেও চাঁদা দাবি করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় ঠিকাদার থানায় লিখিত অভিযোগ দিলেও ভয়ে তা প্রত্যাহার করে নেন। ময়মনসিংহ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গৌরীপুর সার্কেল) সাখের হোসেন সিদ্দিকী দৈনিক ময়মনসিংহ প্রতিদিনকে জানান, নান্দাইল উপজেলা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কিমিটির সাধারণ সম্পাদক ওহেদুল ইসলাম ফয়সাল রোববার সকালে ওসির সরকারি মুঠোফোনে ফোন করে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন।
কয়েক দফা ফোন দিয়ে তা বাড়িয়ে ২ লাখ টাকা চাঁদা চায়। চাঁদা নেওয়ার জন্য থানায় পাঠানো হয় উপজেলা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির চার নেতাকে। পরে তাদেরকে আটক করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।