নেত্রকোনার পূর্বধলায় প্রতিপক্ষের হামলায় পঙ্গু ভিখারী জহুরা খাতুন ওরফে জয়বানু (৯০)। তিনি পূর্বধলা উপজেলার সদর ইউনিয়নের শালদিঘা গ্রামের পঙ্গু রুস্তম খাঁর স্ত্রী। যিনি একসময় ঘোড়ায় চড়ে ভিক্ষা করতেন। স্বামী মারা যাওয়ার পর সংসার চালাতে তিনিও বেছে নিয়েছেন ভিক্ষাবৃত্তি।
রুস্তম খাঁর পঙ্গুত্বের সুযোগে তার চাচাতো ভাই আইন উদ্দিন খাঁ ও জালাল উদ্দিন খাঁ কৌশলে পৈত্রিক সম্পত্তির ৯৩ শতক ফসলি জমি জোর দখল করে ভোগ করতে থাকে।
গত বছর ১৪ সেপ্টেম্বর জহুরা খাতুনের ছেলে জমি চাষ করতে গেলে দলবল নিয়ে আইনুদ্দিন হামলা চালায় ভিখারী পরিবারটির উপর। লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে জহুরা খাতুনের ডান পা ভেঙ্গে দেয় প্রতিপক্ষ। মারাত্মক জখম করে তার দিনমজুর ছেলে মনতাজ, দুলাল ও পুত্রবধুদের। ভুক্তভোগী পরিবারটি হামলায় পঙ্গুত্ববরণ করলেও আদালতে মামলা করে গত এক বছরে ন্যায় বিচার পায়নি। মামলাটি পূর্বধলা থানায় তদন্তাধীন থাকলেও গত এক বছরে কোন অগ্রগতি হয়নি।
বর্তমানে পরিবারটিকে উচ্ছেদ ও প্রাণ নাশের হুমকি দিচ্ছে প্রতিপক্ষরা। বিষয়টি নিয়ে গত ৩ সেপ্টেম্বর জহুরা খাতুনের ছেলে দুলাল খাঁ পূর্বধলা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
পূর্বধলা ইউনিয়নের সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ জানান, বিআরএস মূলে শালদিঘা মৌজায় ৯৩ শতাংশ জমির প্রকৃত মালিক মৃত রুস্তম খাঁ। পৈত্রিকসূত্রে বর্তমানে এই জমির মালিক দুলাল ও মনতাজ খাঁ। আমরা একাধিকবার সালিশির মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে চাইলেও প্রতিপক্ষ তা না মেনে ঝগড়া বিবাদে লিপ্ত হয়।
সদর ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি আব্দুল বারেক মুন্সি জানান, বিরোধপূর্ণ জমিতে দুলাল খাঁ জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে মামলা দায়ের করেছেন।
পূর্বধলা থানার ওসি (তদন্ত) মিজানুর রহমান জানান, মনতাজ খাঁর স্ত্রী মর্জিনা আক্তারের আদালতে দায়ের করা অভিযোগ নেত্রকোণা সিনিয়র
জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত-৩ এর মোকাদ্দমা নং ২৭০ (০১)/২০১৮ ধারা ১৪৩/৪৪৭/৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩২৬/৩০৭/১১৪ তদন্তাধীন ছিল। দীর্ঘ এক বছরেও তদন্ত কাজ শেষ না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বার বার চাহিদাপত্র দিয়েও আহত জহুরা খাতুনের মেডিক্যাল সার্টিফিকেট না পাওয়ার কারণে তদন্ত রিপোর্ট কোর্টে প্রেরণ করা যায়নি। গত ১৯ সেপ্টেম্বর তদন্ত রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে।